পুত্রদা একাদশীর মাহাত্য

পুত্রদা একাদশীর  মাহাত্ম্য












আগামী ২০ জানুয়ারী বুধবার পুত্রদা একাদশী
পুত্রদা একাদশী.....
যুধিষ্ঠির বললেন-
হেকৃষ্ণ !পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের
একাদশীর নাম কি, বিধিই বা কি, কোন
দেবতা ঐ দিন পূজিত হন
এবং আপনি কার প্রতি সন্তুষ্ট
হয়ে সেই ব্রতফল প্রদান করেছিলেন
কৃপা করে আমাকে সবিস্তারে তা বলুন
। শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে মহারাজ! এই
একাদশী ‘পুত্রদা’ নামে প্রসিদ্ধ।
সর্বপাপ বিনাশিনী ও কামদা এই
একাদশীর অধিষ্ঠত্ব ব্রত নেই। এই
ব্রতকারীকে নারায়ন বিদ্বান ও
যশস্বী করে তুলেন । এখন আমার
কাছে ব্রতের মাহাত্ম শ্রবন করুন।
ভদ্রাবতী পুরীতে সুকেতুমান কুমার
নামে একজন রাজা ছিলেন । তার
রানীর নাম ছিল শৈব্যা । রাজ
দম্পতি বেশ সুখেই দিন যাপন
করছিলেন। বংশ রক্ষার জন্য বহুদিন
ধরে-কর্মের অনুষ্ঠান করেও যখন
পুত্রলাভ হলনা তখন রাজা দুশ্চিন্তায়
কাতর হয়ে পড়লেন। তাই সকল
ঐশ্বয্যবান হয়েও পুত্রহীন রাজার
মনে কোন সুখ ছিলনা । তিনি ভাবতেন
– পুত্রহীনের জন্মবৃথা ও গৃহশূন্য ।
পিতৃ- দেব-মনুষ্য লোকের কাছে যে ঋন
শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, তা পুত্র
বিনা পরিশোধ হয় না । পুত্রবান জনের
এ জগতে যশলাভ ও উত্তম গতি লাভ
হয় এবং তাদের আয়ু, আরোগ্য,
সম্পত্তি প্রভৃতি বিদ্যমান থাকে ।
নানা দুশ্চিন্তা গ্রস্থ
রাজা আত্মহত্যা করবেন বলেস্থির
করলেন। কিন্তু পরে বিচার
করে দেখলেন- ‘আত্মহত্যামহাপাপ, এর
ফলে কেবল দেহের বিনাশ প্রাপ্ত হবে,
কিন্তু আমার পুত্রহীনতা তো দূর
হবেনা’। তারপর একদিন রাজা নিবিড়
বনে গমন করলেন । বন ভ্রমন
করতে করতে দ্বিপ্রহর অতিক্রান্ত
হলে রাজ ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর হলেন।
এদিক ওদিক জলাদির অনুসন্ধান
করতে লাগলেন । তিনি চক্রবান,
রাজহংস এবং নানা রকম মাছে পরিপূর্ন
মনোরম সরোবর দেখতে পেলেন।
সরোবরের কাছে মুনিদের
একটি আশ্রমছিল ।
তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন ।
সরোবর তীরে মুনিগন বেদপাঠ
করছিলেন । মুনিবৃন্দের
শ্রীচরনে তিনি দন্ডবত প্রণাম
করলেন । মুনিগন রাজাকে বললেন-
হে মহারাজ ! আমরা আপনার
প্রতি প্রসন্ন হয়েছি । আপনার
কি প্রার্থনা বলুন । রাজা বললেন-
আপনারা কে এবং কি জন্যই বা এখানে সমবেত
হয়েছেন? মুনিগন বললেন- হে মহারাজ !
আমরা ‘বিশ্বদেব’ নামেপ্রসিদ্ধ । এই
সরোবরে স্নান করতে এসেছি । আজ
থেকে পাঁচদিন পরেই মাঘ মাস আরম্ভ
হবে । আজ পুত্রদা একাদশী তিথি ।
পুত্র দান করে বলেই এই একাদশীর
নাম ‘পুত্রদা’। মুনিগন বললেন-
হে মহারাজ ! আজ সেই
পুত্রদা একাদশীতিথি । তাই এখনই
আপনি এইব্রত পালন করুন । ভগবান
শ্রীকেশবের অনুগ্রহে অবশ্যই
আপনার পুত্রলাভ হবে । মুনিদের
কথা শোনার পর যথাবিধানে রাজাকেবল
ফলমূলাদি আহার করে সেইব্রত
অনুষ্ঠান করলেন ।
দ্বাদশী দিনে উপযুক্ত
সময়ে শস্যাদিসহ যোগে পারন করলেন
। মুনিদের প্রণাম করে নিজ
গৃহে ফিরে এলেন । ব্রত
প্রভাবে রাজার
যথাসময়ে একটি তেজস্বী পুত্র লাভ
হল। হে মহারাজ ! এই ব্রত সকলের
পালন করা কর্তব্য । মানব কল্যান
কামনায় আপনার কাছে আমি এই ব্রত
কথা বর্ননা করলাম ।
নিষ্ঠা সহকারে যারা এই
পুত্রদা একাদশী ব্রতপালন করবে,
তারা ‘পুত’ নামক নরক
থেকে পরিত্রান লাভ করবে । আর এই
ব্রতকথা শ্রবন-কীর্তনে অগ্নিষ্টোম
যজ্ঞের ফল পাওয়া যায় । ব্রহ্মান্ড
পুরানে এই মাহাত্ম্য
বর্ননা করা হয়েছে ।

পোষ্ট গুলো শেয়ার করে সনাতন ধর্ম প্রচারে সাহায্য করুন ।

FACEBOOK PAGE  একাদশীর মাহাত্ম্য 

No comments

Powered by Blogger.